অনেকেই অল্প বাজেট এ প্রিমিয়াম সহ ব্লুটুথ ইয়ারফোন খুজে থাকেন, কেও TWS খুজেন, আবার কেও নেকব্যান্ড খুজেন। তো আমি আজকে খুবই অল্প বাজেট এর একটা নেকব্যান্ড এর রিভিও করতে যাচ্ছি, যেটার বর্তমান প্রাইস ১৪০০ টাকার ও কম।
প্রথমেই বলে নেই, এটা আমার কাছে এই বাজেট অভারল বিবেচনায়, বেস্ট এর কাতারেই পরেছে। সম্পুর্ণ আমার পার্সোনাল মতামত, ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
বিল্ড (৪.৫) :-
প্রথমে যদি বিল্ড কোয়ালিটি তে আসি, এটি সম্পূর্ণ প্লাস্টিক এবং রাবারের তৈরি । বাজেট নেকবেন্ড বলে এটার প্লাস্টিকের কোয়ালিটি যা তা করে নাই । এই বাজেট e যথেষ্ট প্রিমিয়াম । খেচ খেচ শব্দ করেন , রাবারের কোয়ালিটি ও ভালোই । Cable টা খুব সফ্ট ,জোরে টান না লাগলে সহজে নষ্ট হওয়ার মত Cable এটা না। পেচ লেগে যায় না সহজে । ওভারঅল আমার কাছে ভালো লেগেছে ।
কমফোর্ট (৪.০০) :-
এটা বেশ Comfortable । লাইট ওয়েট , ঘারে রেখে দিলে তেমন ভারি অথবা চুল্কানি লাগে না। বাডস গুলা ও হাল্কা ই, কানে তেমন ভারি লাগে না, যদি পারফেক্ট সাইজের টিপস ইউজ করা যায়। এটার স্টক টিপস বেশ ভালই, কিন্তু আর একটু Thick হলে কানে গ্রিপ ভাল পেত। চলে যায়।
আমি ২-৩ ঘন্টার ক্লাস করেও তেমন কোনো সমস্যা ফেস করিনি।
সাউন্ডঃ
বেস (৩.৯) –
এটার বেস বেশ ফুলার, ইম্পেক্ট,থাম্প আছে। বুকের মধ্যে ধুক করে উঠার মত বেস এটার স্টক সাউন্ড থেকে পেয়েছি, বেস এর টেক্সচার একটু কম। আর বেস খুব একটা ফাস্ট না, তাই মেটাল গান এ এই ইয়ারফোনের বেস টা ফাস্ট ডেলিভারি দিতে পারে না৷ কিন্তু যারা বেসহেড, তাদের নিঃসন্দেহে এইটার বেস ভাল লাগবে। কিন্তু যারা আমার মত বিয়ে বাড়ির বেস পছন্দ করেন না তাদের কাছে খুব একটা পছন্দ হবে না। তবে হ্যা, এটা কিন্তু App সাপোর্ট করে, তাই Realme Link app থেকে যদি আপনি ব্রাইট সিলেক্ট করেন আর Volume enhancer অপশন অন করে দিলে, অনেকটা বেলেন্সড বেস পাওয়া যায়, যেটা তুলনামুলক ভাল লাগে।
মিডস (৪.০০) –
এটার মিডস এই দামের নেকব্যান্ড হিসেবে আমার কাছে বেস্ট লেগেছে। এই বাজেটের নেকব্যান্ড এ ট্রেবল আর বেস এর ভি শেপ নেচার এর কারনে ভোকাল খুজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এটার মিডস বেশ ফুলার এবং প্রেজেন্টেশন আমার কাছে ভাল লেগেছে, যদিও এটার মিড বেস বেশ কিছু সময় ভোকাল এ ব্লিড করে, যে কারনে কিছু কিছু গানে ভোকাল টা মাডি লাগে, কিন্তু বেশিরভাগ গানে ই ভালো লাগে। আর মিডস এ থাকা ইন্সট্রুমেন্ত সেপারেশন ফর দা প্রাইস বেশ ভাল লেগেছে।
ট্রেবল (৩.৫) –
এটার ট্রেবল সেকশনে আমার আশা আর একটুখানি বেশি ছিল, কেনার আগে ভেবেছিলাম এতা টিপিকাল V শেপ সাউন্ড দিবে। কিন্তু এটার টেবল অনেক রিলেক্সড৷ যারা ট্রেবল সেন্সেটিভ তাদের খুব ভাল লাগবে। তবে গানের ডিটেইল একটু কম পেয়েছি। আর ট্রেবল টা ও একটু পেছনের দিকে, তাই কানের কাছে কেন কেন করবে এমন কোনো সাউন্ড এটা দেয়নি। মুটামুটি লম্বা সময় ধরে গান শুনলেও কানে কোনো ব্যাথা ফিল করি নাই। App থেকে ব্রাইট সিলেক্ট করলে একটু ট্রেবল বেড়ে যায়, কিন্তু তবুও কানে লাগার মত না, তবে ডিটেইল একটূ বাড়ে, যেটা আমার ভালো লেগেছে। তবে ফুল সাউন্ড দিলে একটু Distortion এর দেখা পেয়েছি, যদিই এটা মেটাল গান ছাড়া বোঝা যায় না তেমন।
টেকনিক্যালিটি (৪.২) –
এটার সাউন্ডস্টেজ এভারেজ। তবেই এই প্রাইস এর নেকব্যাড হিসেব করলে ভালোর কাতারেই রাখবো। সাউন্ড সেপারেশন খুব ভাল না হলেও, ভালই। বাম, ডান কানের সাউন্ড গুলো আলাদা ভাবে ফিল করা যায়, সেপারেশন আমার কাছে ভাল লেগেছে৷
গেমিংঃ
গেমিং এ এটার Game Mode অন করে দিলে লেটেন্সি অনেকটা কমে যায়। সেপারেশন ভালো, এনিমি স্পটিং ভালই বোঝা যায়, তবে পাব্জি, ফ্রি ফায়ারের মত গেম এ কেউ, একেবারে লেটেন্সি থাকবে না এই আশা না করা ই ভালো। তবে কেজুয়াল গেমিং চলে যাবে।
মাইক (৪.৫) –
এটার মাইক্রোফোন কোয়ালিটি এই বাজেট এর একটা ওয়ারলেস ইয়ারফোন হিসেবে খুব ই ইপ্রেসিভ। আশেপাশে নয়েজ না থাকলে আস্তে কথা বললেও, অপরপাশের মানুষ কথা বুঝতে পারে, । বাইরে ও এটা দিয়ে কথা বলা যায়, ইভেন আমি বাস এ চলতে চলতে কথা বলেছি এটা দিয়ে, তেমন সমস্যা হয় না, তবে সামান্য জোরে কথা বলতে হয়।
তাই আমি এই বাজেট এ এটার মাইক্রোফোন কোয়ালিটি সেরার কাতারেই রাখবো।
ব্যাটারী (৪.৫) –
এটার ব্যাটারি ব্যাকাপ ও খুবই ভালো ছিল,। ৫০-৬০% ভলিউম এ আমি ১৩-১৪ ঘন্টার মতো ব্যাকাপ পেয়েছি। ভলিউম বাড়ালেও ১০ ঘন্টার উপর ব্যাকাপ পাবেন এটা আমি নিশ্চিন্তে বলতে পারি।